You are currently viewing হাইপোথাইরয়েডিজম (Hypothyroidism) কী?

হাইপোথাইরয়েডিজম (Hypothyroidism) কী?

  • Post author:
  • Post last modified:May 15, 2025
  • Post category:Blog

হাইপোথাইরয়েডিজম (Hypothyroidism) কী?– হাইপোথাইরয়েডিজম হলো থাইরয়েড গ্রন্থির একটি রোগ, যেখানে থাইরয়েড হরমোন (T₃ ও T₄) পর্যাপ্ত পরিমাণে উৎপন্ন হয় না। এই হরমোনগুলি শরীরের মেটাবলিজম, শক্তি উৎপাদন, ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

১. হাইপোথাইরয়েডিজমের কারণ

প্রাইমারি হাইপোথাইরয়েডিজম (থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা)

  • হাশিমোটো থাইরয়েডাইটিস (সবচেয়ে সাধারণ কারণ): ইমিউন সিস্টেম থাইরয়েড গ্রন্থিকে আক্রমণ করে ধ্বংস করে।
  • আয়োডিনের অভাব: থাইরয়েড হরমোন তৈরির জন্য আয়োডিন প্রয়োজন (বিশেষত আয়োডিনযুক্ত লবণ কম খেলে)।
  • থাইরয়েড সার্জারি/রেড়িয়েশন: ক্যান্সার চিকিৎসা বা অপারেশনের কারণে থাইরয়েড ক্ষতিগ্রস্ত হলে।
  • জন্মগত সমস্যা: কিছু শিশু থাইরয়েড গ্রন্থি নিয়ে জন্মায় না বা অকার্যকর থাকে।

সেকেন্ডারি হাইপোথাইরয়েডিজম (পিটুইটারি গ্রন্থির সমস্যা)

  • পিটুইটারি গ্রন্থি TSH (থাইরয়েড-স্টিমুলেটিং হরমোন) কম তৈরি করলে।
  • হাইপোথ্যালামাসের সমস্যা (মস্তিষ্কের অংশ যা পিটুইটারি নিয়ন্ত্রণ করে)।

২. হাইপোথাইরয়েডিজমের লক্ষণ

লক্ষণগুলি ধীরে ধীরে দেখা দেয়:

শারীরিক লক্ষণ

  • অবসাদ, দুর্বলতা, অলসতা
  • ওজন বৃদ্ধি (খাওয়া কম হলেও)
  • ঠান্ডা সহ্য করতে সমস্যা
  • শুষ্ক ত্বক, চুল পড়া (ভ্রু পাতলা হয়ে যাওয়া)
  • গলগণ্ড (গলার কাছে ফোলা)

মানসিক ও স্নায়বিক লক্ষণ

  • মনোযোগের অভাব, স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া
  • ডিপ্রেশন বা মুড সুইং
  • পেশীতে ব্যথা, জয়েন্টে ব্যথা

অন্যান্য লক্ষণ

  • কোষ্ঠকাঠিন্য
  • অনিয়মিত পিরিয়ড বা ভারী রক্তপাত
  • হার্ট রেট কমে যাওয়া (ব্র্যাডিকার্ডিয়া)

৩. রোগ নির্ণয় (Diagnosis)

  • TSH টেস্ট: যদি TSH বেশি হয় এবং T₄ কম হয়, তাহলে হাইপোথাইরয়েডিজম ধরা হয়।
  • অ্যান্টিবডি টেস্ট (TPO Antibody): হাশিমোটো রোগ আছে কিনা জানার জন্য।

৪. চিকিৎসা (Treatment)

  • লেভোথাইরোক্সিন (Levothyroxine): সিনথ্রয়েড, ইউথাইরক্স ইত্যাদি নামে পাওয়া যায়। এটি সকালে খালি পেটে নিতে হয়।
  • নিয়মিত ব্লাড টেস্ট (৬-১২ মাস পরপর) করে মাত্রা ঠিক করতে হবে।

৫. জটিলতা (Complications)

  • গলগণ্ড (Goiter)
  • হৃদরোগ, উচ্চ কোলেস্টেরল
  • মাইক্সিডিমা কোমা (জীবনঘাতী অবস্থা, জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন)
  • গর্ভবতী মহিলাদের সমস্যা (গর্ভপাত, বাচ্চার বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়)

৬. জীবনযাত্রায় পরিবর্তন

  • আয়োডিনযুক্ত লবণ খান (কিন্তু হাশিমোটো থাকলে অতিরিক্ত নয়)।
  • প্রোটিন, সেলেনিয়াম, জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার খান (ডিম, মাছ, বাদাম)।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য।

সতর্কতা

যদি আপনি ক্লান্তি, ওজন বৃদ্ধি, বা ঠান্ডা সহ্য করতে না পারার মতো লক্ষণ দেখেন, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে সহজেই রোগ নির্ণয় করা যায়।