টাইপ ২ ডায়াবেটিস কী?– টাইপ ২ ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘমেয়াদি মেটাবলিক রোগ, যেখানে শরীর পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না অথবা ইনসুলিন তৈরি হলেও তা ঠিকমতো কাজ করে না (একে বলে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স)। ফলে রক্তে গ্লুকোজের (চিনির) মাত্রা বেড়ে যায়।
এই রোগটি সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে দেখা যায়, তবে বর্তমানে শিশুরাও আক্রান্ত হচ্ছে জীবনযাত্রার পরিবর্তনের কারণে।
🔍 উপসর্গ (Symptoms)
- বারবার প্রস্রাব হওয়া
- অতিরিক্ত পিপাসা
- অতিরিক্ত খিদে লাগা
- ক্লান্তি ও অবসাদ
- ক্ষত ধীরে ভালো হওয়া
- ওজন কমে যাওয়া বা হঠাৎ ওজন বেড়ে যাওয়া
- চোখে ঝাপসা দেখা
- হাত-পায়ে ঝিনঝিনে অনুভূতি
অনেকে আবার প্রথম দিকে উপসর্গ টের পান না, তাই নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা জরুরি।
🧬 টাইপ ১ ও টাইপ ২ ডায়াবেটিসের পার্থক্য
বিষয় | টাইপ ১ ডায়াবেটিস | টাইপ ২ ডায়াবেটিস |
শুরু | শিশু বা কিশোর বয়সে | সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে |
ইনসুলিন | একেবারে তৈরি হয় না | তৈরি হয়, তবে কম অথবা ঠিকভাবে কাজ করে না |
চিকিৎসা | ইনসুলিন ইনজেকশন অবশ্যই | খাদ্য নিয়ন্ত্রণ, ব্যায়াম, ওষুধ ও ইনসুলিন প্রয়োজনে |
কারণ | অটোইমিউন | ওবেসিটি, জিনগত, অনিয়ন্ত্রিত জীবনধারা |
🎯 ঝুঁকির কারণ (Risk Factors)
- অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা
- ব্যায়ামের অভাব
- পারিবারিক ইতিহাস
- উচ্চ রক্তচাপ বা কোলেস্টেরল
- গর্ভকালীন ডায়াবেটিস
- অনিয়মিত জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাস
💊 চিকিৎসা ও নিয়ন্ত্রণ
১. ডায়েট নিয়ন্ত্রণ
২. নিয়মিত ব্যায়াম (৩০ মিনিট/দিন)
৩. ওজন নিয়ন্ত্রণ
৪. মেডিসিন / ইনসুলিন প্রয়োজনে
৫. রক্তে গ্লুকোজ নিয়মিত মাপা
৬. স্ট্রেস কমানো ও ঘুম ঠিক রাখা
🥗 খাওয়ার পরামর্শ (Diet Plan – সংক্ষেপে)
✅ খেতে পারেন:
- শাকসবজি (ঢেঁড়স, লাউ, মিষ্টি কুমড়া)
- ওটস, বাদাম, শস্য
- মাছ, ডিমের সাদা অংশ
- কম মিষ্টি ফল (আপেল, পেয়ারা, জাম)
❌ এড়িয়ে চলুন:
- মিষ্টি ও চিনিযুক্ত খাবার
- সফট ড্রিংক, সাদা চাল, সাদা রুটি
- ভাজা-পোড়া খাবার
- প্রসেসড ফুড ও ফাস্টফুড
📌 গুরুত্বপূর্ণ টিপস
- পায়ের যত্ন নিন, কারণ পায়ে সমস্যা হতে পারে
- রক্তে সুগার মাপুন নিয়মিত
- প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন
- ধূমপান ও অ্যালকোহল থেকে বিরত থাকুন